2. সিরীয় হানাদারেরা দলে দলে ইসরাইল দেশে যেত। একবার তারা একটা ছোট মেয়েকে বন্দী করে নিয়ে এসেছিল। সে নামানের স্ত্রীর বাঁদী হয়েছিল।
3. একদিন মেয়েটি তার মালিকের স্ত্রীকে বলল, “আমার মালিক যদি কেবল একবার সামেরিয়ার নবীর সংগে দেখা করতে পারতেন, তাহলে তিনি তাঁর চর্মরোগ ভাল করে দিতেন।”
4. ইসরাইল থেকে আনা সেই মেয়েটি যা বলেছিল তা নামান গিয়ে তাঁর মালিকের কাছে বললেন।
5. জবাবে সিরিয়ার বাদশাহ্ বললেন, “ঠিক আছে, তুমি যাও। ইসরাইলের বাদশাহ্র কাছে আমি একটা চিঠি দেব।” কাজেই নামান তিনশো নব্বই কেজি রূপা, আটাত্তর কেজি সোনা আর দশ সেট কাপড় নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন।
6. যে চিঠিটা তিনি ইসরাইলের বাদশাহ্র কাছে নিয়ে গেলেন তাতে লেখা ছিল, “আমি আমার সেনাপতি নামানকে এই চিঠি দিয়ে আপনার কাছে পাঠালাম যাতে আপনি তাঁকে তাঁর চর্মরোগ থেকে সুস্থ করেন।”
7. ইসরাইলের বাদশাহ্ সেই চিঠি পড়েই তাঁর কাপড় ছিঁড়ে বললেন, “আমি কি আল্লাহ্? আমি কি হত্যা করে আবার জীবন দিতে পারি? চর্মরোগ থেকে সুস্থ হওয়ার জন্য কেন এই লোকটি আমার কাছে একজনকে পাঠিয়েছে? দেখ, কিভাবে সে আমার সংগে ঝগড়া বাধাবার চেষ্টা করছে।”
8. আল্লাহ্র বান্দা আল-ইয়াসা যখন শুনলেন যে, ইসরাইলের বাদশাহ্ কাপড় ছিঁড়েছেন তখন তিনি তাঁকে এই সংবাদ পাঠালেন, “কেন আপনি আপনার কাপড় ছিঁড়েছেন? লোকটিকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিন। তাতে সে জানতে পারবে যে, ইসরাইল দেশে একজন নবী আছে।”
9. কাজেই নামান তাঁর সব রথ ও ঘোড়া নিয়ে আল-ইয়াসার বাড়ীর দরজার কাছে গিয়ে থামলেন।
19-20. আল-ইয়াসা বললেন, “আপনি মনে শান্তি নিয়ে চলে যান।”নামান তাঁর কাছ থেকে কিছু দূরে যাবার পর আল্লাহ্র বান্দা আল-ইয়াসার চাকর গেহসি মনে মনে বলল, “ঐ সিরীয় নামান যা এনেছিলেন তা গ্রহণ না করে আমার মালিক এমনিই তাঁকে ছেড়ে দিয়েছেন। আল্লাহ্র কসম যে, আমি তাঁর পিছনে পিছনে দৌড়ে গিয়ে তাঁর কাছ থেকে কিছু চেয়ে নেব।”
21. এই বলে গেহসি নামানের পিছনে পিছনে দৌড়ে গেল। তাকে তাঁর দিকে দৌড়ে আসতে দেখে নামান তাঁর সংগে দেখা করবার জন্য রথ থেকে নামলেন। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সব কিছু ঠিক আছে তো?”
22. জবাবে গেহসি বলল, “সবই ঠিক আছে। তবে আমার মালিক আপনাকে এই কথা বলবার জন্য আমাকে পাঠিয়েছেন যে, আফরাহীমের পাহাড়ী এলাকা থেকে শাগরেদ-নবীদের দু’জন যুবক এখনই তাঁর কাছে এসেছেন। তাই আপনি যেন দয়া করে তাদের জন্য ঊনচল্লিশ কেজি রূপা আর দুই সেট পোশাক দেন।”
23. নামান বললেন, “ঊনচল্লিশ কেজি কেন? তুমি আটাত্তর কেজি নাও।” তিনি সেগুলো নেবার জন্য গেহসিকে সাধাসাধি করতে লাগলেন এবং আটাত্তর কেজি রূপা দু’টা থলিতে বেঁধে দিলেন ও দুই সেট কাপড় দিলেন। সেগুলো তিনি তাঁর দুই গোলামের হাতে দিলেন আর তারা গেহসির আগে আগে সেগুলো বয়ে নিয়ে যেতে লাগল।
24. কেল্লার পাহাড়ের কাছে এসে গেহসি সেই গোলামদের কাছ থেকে সেগুলো নিয়ে ঘরের মধ্যে রাখল। তারপর সে তাদের বিদায় করে দিলে তারা চলে গেল।
25. এর পরে সে ভিতরে গিয়ে তার মালিক আল-ইয়াসার সামনে দাঁড়াল। আল-ইয়াসা জিজ্ঞাসা করলেন, “গেহসি, তুমি কোথায় গিয়েছিলে?”গেহসি বলল, “আপনার গোলাম কোথাও যায় নি।”
26. কিন্তু আল-ইয়াসা তাকে বললেন, “ঐ লোকটি যখন তোমার সংগে দেখা করবার জন্য রথ থেকে নেমেছিল তখন আমার মন কি তোমার সংগে যায় নি? টাকা-পয়সা, কাপড়-চোপড়, জলপাইয়ের বাগান, আংগুর ক্ষেত, গরু-ছাগল-ভেড়া ও গোলাম ও বাঁদী নেবার এটাই কি সময়?
27. কাজেই নামানের চর্মরোগ তোমার ও তোমার বংশধরদের মধ্যে চিরকাল লেগে থাকবে।” তখন গেহসি আল-ইয়াসার সামনে থেকে চলে গেল আর তার গা চর্মরোগে তুষারের মত হয়ে গেল।